গালাগালিই সুস্থতার প্রতীক

কথায় কথায় কি আপনার মুখ দিয়ে গালাগালি বের হয়৷ রেখে গেলেই কি ‘এর বাচ্চা’ ‘তার বাচ্চা’ বলে অন্নপ্রাশনের ভাত তুলে আনেন? ঘাবড়াবেন না৷ অন্যদের তুলনায় আপনি অনের বেশি সুস্থ৷ আপাতত এমনটাই বলছে সমীক্ষা৷ পাশাপাশি আমনি অন্যদের থেকে অনেক বেশি স্বচ্ছ মনের৷

আর এক্ষেত্রে কিন্তু মেয়েরাই এগিয়ে৷ রেগে গিয়ে কুত্‍‌সিত ভাষা প্রয়োগ করার ব্যাপারে পুরুষেয় চেয়ে বেশ অনেকটাই এগিয়ে মেয়েরা। দীর্ঘ সমীক্ষায় এই তত্ত্বই দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গত ২০১৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি ১০ লক্ষ শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ গালাগালি পুরুষের মুখ থেকে বেরিয়েছে ৫৪০ বার। ওই একই শব্দ মহিলারা বলেছেন ৫৪৬বার। নব্বইয়ের দশকে করা সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, সেই সময়কার একটি চলতি কথা যা গালাগালি হিসেবে ব্যবহার করা হত– তা পুরুষের তুলনায় অন্তত ৪ গুণ বেশি ব্যবহার করেছেন মহিলারা। আবার ওই দশকেই দেখা গিয়েছে, প্রতি ১০ লক্ষ শব্দের মধ্যে গালাগালির তালিকায় যোগ হওয়া নতুন একটি শব্দ পুরুষরা ব্যবহার করেছেন ১০০০ বার, আর নারীর মুখ থেকে শব্দটি বেরিয়েছে মাত্র ১৬৭ বার।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস এবং ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষ ও নারীর ভিন্ন শব্দ প্রয়োগের প্রচলন তামাদি হয়ে যেতে বসেছে। সমকালে দুই লিঙ্গের মধ্যে শব্দ প্রয়োগের কোনও ফারাকই থাকছে না। মহিলাদের কটূভাষী করে তোলার পিছনে কিন্তু পুরুষকেই দায়ী করেছেন গবেষণায় নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক টোনি ম্যাকএনারি। দেখা গিয়েছে, ৯০-এর দশকে পুরুষরা প্রকাশ্যে গালাগালি দেওয়া প্রায় ফ্যাশনের পর্যায়ে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই আচরণ ক্রমে মহিলাদের মধ্যে সংক্রামিত হয়। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে গিয়ে তাঁদের বদভ্যাসটিও অজান্তে রপ্ত করে ফেলেন আধুনিক নারী। তবে ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা কথাবার্তায় স্মার্ট, গালাগালি দেওয়ার অভ্যাস তাঁদের মধ্যে তুলনায় বেশি। প্রশ্নের চটজলদি জবাব দিতে এবং ভাষার দখলেও তাঁরা অন্যদের চেয়ে বেশি এগিয়ে। শব্দ প্রয়োগের ব্যাপারেও তাঁরা অত্যন্ত দক্ষ। এতগুলি গুণের মধ্যে শুধু গালাগালি ব্যবহারই যা দোষের।